কহিলেন রাজা

ডাকিয়া সকল মন্ত্রী সভাসদরে-

“কহো মোরে জীবনের অর্থ,

কি এর মানে ?”

 

শুনিয়া হেন কথা-

হাসিলো সকলে মনে মনে;

কহিলো মন্ত্রী,

“এ তো বড়ই সহজ রাজামশায়,

 জীবন মানে-

হাসি-তামাশা আর

কৌতুকে ভরপুর,

দুঃখ যেথা থাকে

এক যোজন দূর।”

 

“থামো, থামো-

এতো সহজ নয় ব্যাপারখানা,

এত তুচ্ছ ব্যাপার

কি রাতদুপুরে

দিয়েছে রাজার মাথায় হানা!

কহো তুমি রাজকবি

কি তোমার রয়েছে জানা।”

 

 “জীবন মানে-

রাজামশায় কবিতা

যে কবিতা লিখছি

প্রতি মূহুর্তে আমরা;

নেই এর কোন

সংজ্ঞা বাঁধাধরা।”

 

“বুঝেছি আমি

মূর্খ তোমরা সবে

জীবনের অর্থ কারোরই

 নেই জানা তবে।”

বিরহ

ডিসেম্বর 26, 2009

কোন কথা তুমি

বোলোনা আজ

শুধু চেয়ে চেয়ে

বয়ে যাক সাঁঝ।

কেন মিছে

কাছে ডাকো মোরে

কাছে এলেই

দূরে যাও সরে-

এ কি মিথ্যা মায়ায় জড়াও

শুধু বিরহ বেদনায় কাঁদাও।।

অভিমান

ডিসেম্বর 19, 2009

কেন তুমি

চলে যাও ফিরে

অভিমান ভরে-

ছিলে নতমুখে

মোর দুয়ারে দাঁড়িয়ে;

যত ব্যথা দিয়েছি

মনে রেখো শুধু

ভালোবাসাটুকু রেখো সরিয়ে।।

 

 

 
 

 

তুমি আছো

স্তব্ধ রাতের তারার মাঝে

তুমি আছো

রবীন্দ্রনাথের ‘ছিন্নপত্রে’

তুমি আছো

জীবনানন্দের ‘ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে’

তুমি আছো

কোন সীমাহীন নিসর্গতায়,

কোন কবিতার উপমায়;

তুমি আছো রমনার বটমূলে

পহেলা বৈশাখের গানে আর

বসন্তের আনন্দ উৎসবে;

তুমি আছো কীর্তনখোলায়

কিংবা নাম না জানা

কোন গ্রামের মেঠোপথে,

স্নিগ্ধ কাশবনে;

তুমি আছো ঘাসফুলের উপর

ভোরের শিশিরকণায়;

সবকিছুর মাঝেই তোমায় খুঁজে পাই আমি

তাই কোথাও আর খুঁজতে যাইনা তোমায় !

 

রাত দ্বিপ্রহর

        নিবিড় রাতের নিস্তব্ধতা

ভেঙে দিয়ে

দেয়ালঘড়িটা বেজে উঠলো

ঢং..ঢং..ঢং…

সেই শব্দ ছাপিয়ে উঠলো

অবগুন্ঠনে ঢাকা

সমস্ত বিশ্ব চরাচরে,

তারপর..

সেই অন্তহীন-স্তব্ধ-মৌন রাত;

মুগ্ধ আঁখি মেলে

বিস্ময়ে কি এক আবেশে

অনিমেষ আমি চেয়ে রই

সঘন আঁধারে,

বিমূর্ত রাত যেন বয়ে চলেছে

 অনন্ত অনাদিকাল ধরে,

চন্দ্রালোক ঢেলেছে সুধা-বারি

অসীম আকাশে-

কি শান্ত, সৌম্য রূপ!  কি স্নিগ্ধতা!

ইচ্ছে করছে অবগাহন করি

এই নিঃসীম চন্দ্রালোকে,

সমস্ত পৃথিবী যখন তন্দ্রাচ্ছন্ন

মগ্ন ঘুমের ঘোরে-

তখন কি অপার সৌন্দর্য

ঢেলেছো তুমি

এই পারাবারে-কিসের তরে!

 

 

অনন্ত অম্বরে

ডিসেম্বর 4, 2009

 তারপর মেয়েটা হাঁটতে থাকে
একা রেললাইন ধরে
দৃষ্টি দূরে- অনেক দূরে
হাঁটতে হাঁটতে
ক্রমশঃ দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়
পথও একসময় ফুরিয়ে আসে
কিন্তু তার পথচলা
আর শেষ হয়না;
মনে পড়েনা ঠিক কবে থেকে
এই ছুটে চলা শুরু-
না, এসব আর ভাবতে চায়না
জীবনের এমন এক প্ল্যাটফর্মে ও দাঁড়িয়ে
যেখান থেকে কোনদিন
কোন ট্রেন ছেড়ে যায়না,
কোন ট্রেন এসে থামেনা
শুধু দূর থেকে ছুটন্ত ট্রেনকে
চলে যেতে দেখা যায়।

তবুও মেয়েটা অপেক্ষায় থাকে
ট্রেন আসবে বলে-
এভাবে বেঁচে থাকা চলেনা
এ জীবনের কোন মানে নেই।

দূরে একটা ট্রেন আসার
শব্দ শোনে,
ও থমকে দাঁড়িয়ে শোনে
মৃত্যুর পূর্বমূহুর্তে কোন
আনন্দের মূহুর্ত ভাবতে চায়
রাত শেষ হয়ে আসে
রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে দিয়ে
ট্রেন আসে-
একে একে রাতের মৌন আকাশের
তারাগুলো ঝরে যায়।

ট্রেনটা ওর সামনে এসে
হঠাৎ থেমে যায়
মেয়েটা কিছু না ভেবেই
ট্রেনে উঠে পড়ে,
ও জানেনা ওর গন্তব্য কোথায়-
শুধু ছুটে চলে
দূরে…দূরে…বহুদূরে…
কোন সীমাহীন অনন্ত অম্বরে।।